ইন্টারনেট সৃষ্টির ইতিহাস কী?

0
181
ইন্টারনেট সৃষ্টির ইতিহাস কী?
পৃথিবীতে ইন্টারনেট প্রযুক্তি উদ্ভাবনের আগেই, অনেক বিজ্ঞানী ওয়ার্ল্ড ওয়াইড কম্যুনিকেশন প্রযুক্তির অস্তিত্ব অনুভব করেছিলেন। এমনকি কম্পিউটার আবিষ্কৃত হওয়ার আগেই, তারা ভবিষ্যতবাণী করেছিলেন যে এমন একটি নেটওয়ার্ক তৈরী করা সম্ভব, যেটি কিনা বিশ্বব্যাপী সবার কাছে পৌছুতে পারবে।
১৯০০ সালে নিকোলা টেসলা, “World Wireless System” নামক একটি প্রযুক্তি তৈরীর প্রস্তাব দেয়, যেখানে কিনা তিনি শক্তিরূপে তথ্য পুরো পৃথিবীজুড়ে পাঠাতে পারবেন। এমনকি তিনি একটি তারবিহীন স্টেশন তৈরী করেছিলেন, আমেরিকা থেকে ইংল্যান্ড, এবং সমুদ্রে থাকা জাহাজগুলোতে বার্তা পাঠানোর জন্য।
তারপর ১৯৬০ এর দশকে নেটওয়ার্ক কম্যুনিকেশন, ধীরে ধীরে বর্তমান সময়ের ইন্টারনেটে পরিণত হতে থাকে। আমেরিকার একটি মিলিটারি গভর্নমেন্ট এজেন্সি বা “Advanced Projects Research Agency Network” (ARPANET) তাদের অনেকগুলো আলাদা কম্পিউটারকে একজায়গা থেকে নিয়ন্ত্রণ/যোগাযোগ করার জন্য একটি নেটওয়ার্কে তৈরী করে। ফলে কম্পিউটার থেকে যোগাযোগ করা অনেকটাই সহজ হয়ে যায়।

 

ইন্টারনেটের পথ বিস্তৃত হতে থাকে যখন রবার্ট কহেন এবং ভিনটন কার্ফ, Transmission Control Protocol (TCP) এবং Internet Protocol (IP) তৈরী করেন। এটি একটি কম্যুনিকেশন মডেল, যেটি কিনা একাধিক নেটওয়ার্কের মধ্য দিয়ে কিভাবে ডাটা পরিবাহিত হবে সেটা ঠিক করে।
আর সবশেষে এইসব আইডিয়াকে একত্রিত করে ১৯৯০ এর দশকে টিম বার্নারস-লি, আবিষ্কার করেন ”ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব” বা “WWW”. এরই মাধ্যমে বার্নারস-লি, মানুষকে ইন্টারনেটের সাধারণ বিষয়বস্তু যেমন: ওয়েবপেজ, হাইপারলিংক, ব্রাউজার, ম্যাসেজিং সিস্টেম ইত্যাদি দ্বারা যুক্ত করে।
এরপর থেকে আমাদের আর পিছনে তাকাতে হয়নি এবং সময়ের সাথে সাথে মানুষ ইন্টারনেটের সাথে পরিচিত হতে পেরেছে। আজ আমরা সবাই এই ইন্টারনেটের মাধ্যমেই একে অপরের একত্রিত হতে পেরেছি এবং বিশ্ব আসলেই আমাদের হাতের মুঠোয়!
ছোট করে বলতে গেলে ইন্টারনেট মোটেও একজন ব্যাক্তি বা কোম্পানী দ্বারা তৈরী হয়নি, বরং একেক সময়ে একেজনের ধারণাকে একত্রিত করে আজ আমরা আজকের ইন্টারনেটে পৌছুতে পেরেছি।এখানে ইন্টারনেটের ইতিহাসে উল্লেখযোগ্য কিছু ওয়েবপেজ/কোম্পানীর শুরুটা তুলে ধরবো, ফলে এরই মাধ্যমে আপনি ইন্টারনেটের বিবর্তন সম্পর্কে একটু হলেও ধারণা পাবেন –
১৯৮৯ – ইমেইল সার্ভিস, ইন্সটেন্ট ম্যাসেজিং, ব্রাউজার হিসেবে AOL অনেক জনপ্রিয়তা পায়।
১৯৯০ – জনপ্রিয় সিনেমা, টিভি সিরিজ, অভিনেতা/অভিনেত্রীদের খবর, মুভি রেটিংস ইত্যাদি নিয়ে IMDb ইন্টারনেটে আসে।
১৯৯৪ – Yahoo! তার বিভিন্ন সার্ভিস নিয়ে ইন্টারনেটে AOL এর প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠে।
১৯৯৫ – একটি রিটেইলার অনলাইন ও অকশন শপ হিসেবে Amazon ও Ebay উঠে আসে।
১৯৯৬ – Hotmail ওয়েব ভিত্তিক মেইল এর জন্ম।
১৯৯৭ – বর্তমান সময়ের সবথেকে জনপ্রিয় সার্চ ইঞ্জিন, Google Search, তার ডোমেইন রেজিস্টার করে।
১৯৯৮ – পৃথিবীজুড়ে বিখ্যাত অনলাইন টাকা পাঠানোর মাধ্যম, PayPal এর শুরু।
২০০১ – সবথেকে বড় উন্মুক্ত বিশ্বকোষ, Wikipedia, প্রকাশিত হয়।
২০০৩ – জনপ্রিয় বিজনেস নেটওয়ার্কিং ওয়েবসাইট LinkedIn, Skype ইন্টারনেট ভিডিও/ভয়েস কল, iPod এর জন্য অ্যাপলের iTunes Store.
২০০৪ – মার্ক জুকারবার্গের হাত ধরে সবথেকে জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া, Facebook তার যাত্রা শুরু করে।
২০০৫ – সবথেকে বড় ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম, YouTube প্রকাশিত হয় এবং সেই সাথে লিংক ভোটিং ওয়েবসাইট Reddit.
২০০৬ – মাইক্রোব্লগিং ওয়েবসাইট Twitter.
২০০৭ – অ্যামাজনের Kindle, ই-বুক রিডার এবং ভার্চুয়াল বইয়ের অনলাইন শপ।
২০০৮ – ক্লাউড স্টোরেজ ফাইল হোস্টিং Dropbox, বাইরের দেশে জনপ্রিয় মিউজিক স্ট্রিমিং সার্ভিস Spotify, প্রাইভেসিকে গুরুত্ব দিয়ে শুরু হয় গুগলের প্রতিদ্বন্দ্বী সার্চ ইঞ্জিন DuckDuckGo এর পথচলা।
২০০৯ – মাইক্রোসফটের Bing সার্চ ইঞ্জিন, সবচেয়ে জনপ্রিয় ম্যাসেজিং অ্যাপ WhatsApp.
২০১০ – ফটো শেয়ারিং এবং সোশিয়াল নেটওয়ার্কিং সাইট Instagram. এমনকি প্রশ্ন-উত্তরের প্ল্যাটফর্ম Quora একই বছরে মুক্তি পেয়েছিল। কোরার শুরুর দিনগুলো এই উত্তরে সুন্দর করে দেওয়া আছে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here